অর্জুন দ্বারা নির্মিত দুর্গা মন্দির।। কনক দুর্গা মন্দির। জানেন কোথায় আছে __Full-HD

  • 4 years ago
কৃষ্ণা নদীর ধারে সাজানো শহর বিজয়ওয়াড়া। শহরকে ঘিরে রেখেছে পূর্বঘাট পর্বতমালা। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই সবুজ ঘেরা ছোট ছোট পাহাড়। শহরের পিচ ঢালা রাস্তাগুলো চড়াই উৎরাই। বোঝা যায় পাহাড় কেটেই তৈরি হয়েছে অপেক্ষাকৃত নতুন শহরটি। শহরের জন্ম ধর্ম মেনে পাশে পাওয়া গেছে কৃষ্ণা নদীকে। কৃষ্ণা ড্যাম বেঁধেছে নদীর জল। কৃষ্ণার গা বেয়ে উঠেছে পাহাড়ে সারি। তারই একটি ইন্দ্রকিলাদ্রি পাহাড়।

উঁচু পাহাড়ের গা বেয়ে উঠে গেছে রাস্তা। গাড়ি ওঠার মত না হলেও বেশ চওড়া। পাহাড়ের প্রায় মাথার কাছে কনক দুর্গা মন্দির। সহজ কথায় দুর্গা মন্দির। রাজ্যের বাইরে দুর্গা মন্দিরের নাম শুনলে মন্দ লাগে না। দেখার ইচ্ছাটাও বেশ চাড়া দেয়। কনক দুর্গা মন্দিরে যাওয়া মানে এক কথায় রথ দেখা আর কলা বেচা দুটোই একসাথে সেরে নেওয়া। ঘোরাকে ঘোরাও হল, আর দেবী দর্শনও হল।

বিজয়ওয়াড়া শহরের কোলাহল ছেড়ে কিছুটা দুরে এই মন্দিরে যেতে গেলে পাহাড়ে চড়া ছাড়া অন্যপথ নেই। পাহাড়ের গা বেয়ে তৈরি পাথুরে রাস্তা দিয়ে যত উপরে ওঠা যায়, ততই কৃষ্ণা নদীটা অপরূপ হতে শুরু করে। দূরে রেল ব্রিজ। তার উপর দিয়ে ট্রেন গেলে পাহাড়ের উপর থেকে গোটা ট্রেনটাকে খেলনা গাড়ি বলে মনে হয়। নদীর উপর ভেসে বেড়ানো নৌকাগুলো ছবির মতো দেখতে লাগে। কনক দুর্গা মন্দিরটা সত্যিই সুন্দর। পাহাড়ের উপর বিশাল মন্দির। কথিত আছে এখানেই শিবের উপাসনা করে ‘পাশুপথাস্ত্র’ অর্জন করেন পাণ্ডুপুত্র অর্জুন। পরে অর্জুনই এখানে কনক দুর্গা মন্দিরটি তৈরি করেন।



দুর্গাপুজোর সময় এই মন্দিরই শুধু নয়, গোটা ইন্দ্রাকিলাদ্রি পাহাড়টা কনের সাজে সেজে ওঠে। আলোক মালায় ঝলমল করে গোটা পাহাড়। পুজোর দিন গুলোয় ভিড়ও হয় চোখে পড়ার মতন। তবে কনক দুর্গা মন্দিরে সবচেয়ে বেশি মানুষের ঢল নামে দশেরা বা বিজয় দশমীর দিন। সেদিন শুধু স্থানীয় মানুষজনই নন, দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় জমান এখানে। আকর্ষণটা শুধুই দুর্গাদর্শন নয়। কৃষ্ণার উপর ড্যামের কালো পিচ ঢালা রাস্তায় থিকথিক করে মানুষ। আলোর মালায় সাজানো পক্ষীরাজ নৌকা রাজকীয় সাজে সেজে ওঠে এদিন। তারপর কৃষ্ণার একপাশ থেকে যেদিকে কনক দুর্গা মন্দির সেদিকে পাড়ি দেয় পক্ষীরাজ। সন্ধে নামায় কৃষ্ণার জলের রঙ তখন শুধুই কালো। সেই কালো জলের উপর দিয়ে রাজকীয় ঢঙেই ভেসে চলে সেই নৌকা।

কৃষ্ণার চারপাশে হাজারো মানুষের চোখ তখন শুধুই সেই আলোক সজ্জিত নৌকার দিকে। নৌকা অন্যপাড় ছুঁতেই শুরু হয় বাজি পোড়ানো। তাক লেগে যায় সেই বাজির রোশনাইতে। কত রঙ, কত তার রঙ্গ। অন্ধ্রপ্রদেশের বাণিজ্য নগরী বিজয়ওয়াড়া শহরের নানা প্রান্ত থেকেও মানুষের চোখ ধাঁধিয়ে যায় রংবাহারি আতসবাজির আলোয়। দশেরার দিন কৃষ্ণা নদীর জলে পুণ্যস্নানও সারতে দেখা যায় অনেককে। সাগরস্নান বা কুম্ভস্নানের মত মানুষের বিশ্বাস দশেরার দিন কৃষ্ণার জলে স্নান করলে ধুয়ে যায় পাপ। অর্জন হয় পুণ্য।
কনক দুর্গার আর এক নাম বিজয়া। সেই থেকেই এই শহরের নাম বিজয়ওয়াড়া। বেশ সাজানো শহর বিজয়ওয়াড়ার অবস্থান অন্ধ্রপ্রদেশের অর্থনৈতিক মানচিত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বিজয়ওয়াড়ার প্রধান আকর্ষণ কনক দুর্গা মন্দির। এই মন্দিরের টানেই পর্যটকরা হাজির হন বিজয়ওয়াড়ায়। বিজয়ওয়াড়া স্টেশনে ট্রেন থামলেই দূরে পাহাড়ের উপর  কনক দুর্গা মন্দির নজর কাড়ে। স্টেশন থেকে গাড়িতে মিনিট দশেক লাগে ইন্দ্রকিলাদ্রি পাহাড়ের পাদদেশে অব্ধি পৌঁছতে। তারপর উপরে উঠতে যার যা সময় সময় লাগে।
আমার ব্লগ : https://www.talksoftheesrth.blogspot.com
আমার ফেসবুক পেজ: https://www.facebook.com/natun digonto
Please follow my channel.

Category

📚
Learning

Recommended